আজ অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে বহু কাঙ্গিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পেকুয়া উপজেলা শাখার সম্মেলন ও কাউন্সিল। সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত ও চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। উপজেলা ছাত্রদলেল নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানায় সব আয়োজন শেষে আজ বিকালে পেকুয়া সমবায় কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্টিত হচ্ছে উপজেলা ছাত্রদলের দ্বী বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন। কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল বিগত কয়েক মাস আগে মোন্তাজির কামরান জাদিদ মুকুটকে আহবায়ক করে অন্যান্য ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কে যুগ্ম আহবায়ক করে একটি আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়। এই কমিটি কয়েক মাস যেতে না যেতেই হঠাৎ করে উপজেলা বি এন পির সুপারিশক্রমে আহবায়ক কমিটি বর্ধিত করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট করা হয় যে কমিটিতে জায়গা করেন নবীন ও প্রবীনরা। এর মাঝে জায়গা হয় দর্জি, মিকার, বিবাহিতা, ছাত্রত্ব নেই এমনও অনেকের। তখন থেকে সেই কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে ছিল চরম বিতর্ক। সেই থেকে ঐ কমিটি নিয়ে গ্র“পিং সৃষ্টি হয়। ফলে দুইটি বিশাল গ্র“পের জন্ম হয় একটির নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন আহবায়ক মোন্তাজির কামরান জাদিদ মুকুট অন্যটির নেতৃত্বে দিয়ে আসছেন যুগ্ম আহবায়ক আহসান উলাহ। এভাবে দুইটি গ্র“পিং একে অপরের সাথে দা কুমড়ার মতো সম্পর্ক সৃষ্টি করতে থাকেন। তার পর ও পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়া কমিটিকে উজ্জীবিত করার জন্য আহবায়ক কামরান জাদিদ মুকুট নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েছেন। ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করেছেন কারানির্যাতিত ছাত্রনেতা কামরান জাদিদ মুকুট। পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে জানা গেছে এক ডজন নেতাকর্মী পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সেক্রেটারী পদের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে ইতিমধ্যে জোর তদবীর ও লবিং শেষ করে আজ প্রার্থীতা করছেন। উপজেলার অনেক ছাত্রদল নেতা কক্সবাজারে গিয়ে সিনিয়র নেতাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে ও গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাগিয়ে নিতে চেষ্টা তদবীর করে এসেছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কয়েকজন ছাত্রদল নেতার পক্ষে বেশ জোরেসুরেই প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কর্মী সমর্থকরা বেশকয়েকদিন ধরে। এদিকে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনকে ঘিরে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের তৃণমূলের ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও বেশ চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মীরা জানান তারা সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনে বিবাহিত নেতাদের হাতে ছাত্রদলের দায়িত্ব তুলে দেবো না তবে ছাত্রদলের ত্যাগী ও প্রকৃত ছাত্র ও যোগ্য ছাত্রকে সভাপতি ও সেক্রেটারী হিসাবে নির্বাচিত করবেন। কোন অছাত্র বিবাহিত ও সুবিধাবাদী নেতাকে কোন পদ অধিষ্টিত করতে চাচ্ছেন না তারা। বিগত সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে বি এন পির সাথে মাঠে ছিল এমন ত্যাগী ও নির্যাতিত ছাত্রদল নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তৃণমূলের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এখন অপেক্ষার প্রহর গুনছে সাধারণ নেতাকর্মীরা কারা হচ্ছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রসমাজের অভিভাবক। কিন্তু বিবাহিতদের হাতে নেতৃত্ব যাচ্ছে কিনা এমন সন্দেহে সাধারণ নেতাকর্মীরা! প্রাপ্ত তথ্য জানা যায় আহবায়ক কমিটি ঘোষনার ১৮ মাস অতিক্রম হলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। গ্রে“পিং এর কারণে সংগঠনটিতে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। যুগের পরিবর্তনের কারণে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের নেতারা পেকুয়ায় যোগ্য প্রতিষ্টা করতে ব্যর্থ হয়। ছাত্রদলের তৃণমূলের কর্মীরা জানান যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ছাত্রদলের এখন রাজনৈতিক শূণ্য একটি দলে পরিণত হয়েছে। দলকে সু সংসঠিত করতে হলে অবশ্যই যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। অন্যতাই পেকুয়াতে এ দলটি ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মূখে পড়তে যাচ্ছে নি:সন্দেহে বলা যায়। আহবায়ক কমিটি করার কিছু দিন পর পেকুয়ার অন্যতম পেকুয়া জিয়া কলেজের ছাত্রদলের কমিটি করা হয় উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কামরান জাদিদ মুকুটের নেতৃত্বে। ঐ কমিটিতে হানিফকে সভাপতি ও রাজুকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করা হয়। ঘোষণার পরদিন হানিফ পেকুয়া চৌমুহীতে এসে সাধারণ সম্পাদক রাজুর সাথে বাকবিতন্ডা হলে মারামারি সংঘটিত হয় এতে হানিফ আহত হন। এরপর শুরু হয় তুমুল গ্র“পিং। হামলার পর পরই উপজেলা বি এন পির পরামর্শক্রম উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কামরান জাদিদ মুকুট রাজসহ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকর্মীকে বহিস্কার করে। তার পর রাজুর নেতৃত্বে বহিস্কৃত ছাত্রনেতারা আহবায়ককে মানি না মানব না বলে শোগান দেয়। এর পরই মগনামা ও রাজাখালী ইউনিয়ন পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেন। যা পরে আরো বিতর্কের জন্ম দেয়। সেই থেকে পেকুয়া উপজেলার ৮ টি ইউনিটে আর কমিটি ঘোষনা করতে পারেনি। তার ফলে বি এন পির দূর্গ বলে খ্যাত পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদল চরম ইমেজ সংকটে পড়েন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পেকুয়া উপজেলায় ২টি ইউনিটসহ ৭টি ইউনিয়ন, দুইটি কলেজ, ৮টি মাদ্রাসা, ১০টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু এসব ইউনিটে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে আহবায়ক কামরান জাদিদ মুকুট ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আহসান উলাহ এর নেতৃত্বে আহবায়ক কমিটি। এ ব্যর্থ কমিটি নিয়ে সম্মেলন আয়োজন করায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক ছাত্রদল কর্মী বলেন এই আহবায়ক কমিটির অনেক যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য বর্তমানে দেশে নেই এ কমিটির মতো ছাত্রদলের কলংক ছাড়া আর কিছুই নয়। বি এন পির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদের নিজ উপজেলায় এমন হ- য -ব- র- ল কমিটি বি এন পির জন্য বড় লজ্জা বলে মনে করেন কেউ কেউ। কমিটি গঠনের পর থেকে আহবায়ক মুকুট ও যুগ্ম আহবায়ক আহসান উলাহের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে ছাত্রদলের কার্যক্রম অনেকটা চাঙ্গা ছিল। সবশেষ বি এন পির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোঁজ নিয়ে মুকুট ও আহসান উলাহর নেতৃত্বে মিছিল মিটিং সরব ছিল রাজপথ। মধ্য খানে পুলিশের ভয়ে মুকুট কোণঠাসা হয়ে গেলে আহসান উলাহ বিয়ে করতে এবং শীর্ষ পদে থাকা নেতারা মাঠে ময়দানে না থাকায় পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। এ দিকে আতংক বোধ করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা বিবাহিতদের হাতে নেতৃত্ব যাচ্ছে কিনা। তারা আরো জানান বর্তমান ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আহসান উলাহ সম্প্রতি বিয়ে করেছে। আবার অনেকই ছাত্রত্ব নেই। এমনকি অভিযোগ রযেছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা পেকুয়ায় কয়েকবার এসে গ্র“পিং নিরসনের চেষ্টা চালায় যা তারা পেকুয়া ছাড়ার পর পর আবার শুরু হয়। তবে পেকুয়ার মতো বি এন পির দূর্গে এমন কমিটি নিয়ে হতাশ জেলা বি এনপি। তবে নেতাকর্মীরা দাবী করছেন তাদের কথা চিন্তা করে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল ও পেকুয়া উপজেলা বি এন পি অতীত মনে রেখে সময় উপযোগী একটি কমিটি ঘোষনা দিবেন। এদিকে উক্ত সম্মেলনে উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল, প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কক্সবাজার জেলা বি এন পির সভাপতি সাবেক হুইপ ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধূরী, বিশেষ অতিথি থাকবেন জেলা বি এন পির সাধারণ সম্পাদীকা এডভোকেট শামীমা আরা স্বপ্না, উপজেলা বি এনপির সভাপতি ও সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন, উপজেলা যুবদলের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ছরওয়ার রোমান, প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনিরসহ জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দরা। উক্ত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোন্তাজির কামরান জাদিদ মুকুট।
এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কামরান জাদিদ মুকুটের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান সম্মেলনের যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে আজ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গ্র“পিং এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন গ্র“পিং নাই বলে জানান।
এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা বি এন পির সভাপতি ও সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ছাত্রদলের সম্মেলন উপলক্ষে নেতাকমীদের মাঝে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ত্যাগি নেতাকর্মীরা স্থান পাবেন বলে ও জানান।
পাঠকের মতামত: